মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকার বলতে বোঝায় এমন কাউকে যে তাঁর পড়াশোনা বা দক্ষতা অনুযায়ী কোন চাকরি পায় নি। আর আমরা আমাদের দেশে বেকার তাঁদের বলি যারা বাজারে যা বেতন নির্দিষ্ট রয়েছে তাঁর থেকে কম বেতনে কাজ করতে ইচ্ছুক, তা সত্ত্বেও কাজ বা চাকরি পায় না, এমন।
কর্পোরেট এবং অর্থনৈতিক সংস্কৃতি
বেকারত্বঃ একটি মহামারী
বেকারত্বঃ একটি মহামারী
বেকারত্বঃ একটি মহামারী
মূলঃ সাইয়েদ শাহবায আলম
অনুবাদেঃ মোজাহিদুল ইসলাম
বেকারত্বঃ একটি মহামারী
উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় দেশের একটি সর্বকালীন সমস্যা হল ‘বেকারত্ব’। কিন্তু বিভিন্ন দেশে বেকারত্বের মাত্রাটা ভিন্ন রকমের হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকার বলতে বোঝায় এমন কাউকে যে তাঁর পড়াশোনা বা দক্ষতা অনুযায়ী কোন চাকরি পায় নি। আর আমরা আমাদের দেশে বেকার তাঁদের বলি যারা বাজারে যা বেতন নির্দিষ্ট রয়েছে তাঁর থেকে কম বেতনে কাজ করতে ইচ্ছুক, তা সত্ত্বেও কাজ বা চাকরি পায় না, এমন।
প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ জন মেনার্ড কেইনস ‘বেকারত্ব’কে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমস্যা বলে মনে করেন। তিনি বলেছিলেন, যদি দেশে বেকারদের দেওয়ার মতো কোন কাজ না থাকে তাহলে সরকারের উচিত হবে যে তাঁদের দিয়ে গর্ত খুঁড়ে আবার তারা সেই গর্ত মাটি দিয়ে ভরাট করে দেবে। এর দ্বারা কোনো লাভজনক কাজ বা কোনো ধরণের কোন কিছু উৎপাদন তো হবেনা ঠিকই, কিন্তু তারা বেকারত্ব থেকে রক্ষা পাবে। ফলে তারা আর কোনও অপ্রয়োজনীয় কাজেও জড়িত হবে না।
বেকারত্বের হার যত দ্রুত হ্রাস পাবে, দেশে তত দ্রুত অর্থনীতি বৃদ্ধি পাবে। ফলে দেশে পণ্যের চাহিদা বাড়বে, যা দেশকে শিল্প উন্নয়নের দিকে এগিয়ে রাখবে।
উন্নয়নশীল দেশগুলিতে বেকারত্বের কয়কটি ভাগ দেখা যায়ঃ
মৌসমী বেকারত্বঃ (Seasonal
Unemployment)
এ জাতীয় বেকারত্ব কৃষি খাতে পাওয়া যায়। কৃষিকাজে জড়িত লোকেরা লাঙ্গল চষা, বীজ বপন, ফসল তোলার মতো কাজ করেন বা পেয়ে থাকেন। তবে সেই মরশুম অতিবাহিত হয়ে গেলে তাদের কাছে আর কোন কাজ থাকেনা। তখন তারা বেকার হয়ে পড়ে।
অসাধারণ বেকারত্বঃ (Extraordinary
Unemployment)
এ জাতীয় বেকারত্ব এমন যারা বলে যে, তাঁদের মধ্যে
কিছু মানুষের উৎপাদন কম হয়। যদি এ জাতীয় মানুষগুলোকে সরিয়েও দেওয়া যায় তবুও
উৎপাদনে কোন তফাৎ দেখা দেবে না। যেমন মনে করুন যে, কোনো একটি বুটিক কোম্পানিতে রোজ
১৫০ টি ড্রেস তৈরি হয়, আর সেই ১৫০ ড্রেস তৈরিতে ১৫ টি শ্রমিক রয়েছে যার মধ্যে এমন
দু’জন রয়েছে যারা কিছুই করে না। এবং তাদেরকে যদি চাকরী থেকে বরখাস্ত করে দেওয়া হয় তবু
কোম্পানির কোন ক্ষতি হবে না।
নতুন প্রজন্মের বেকারত্বঃ (New Generation Unemployment)
বর্তমানে যুবসমাজের একটি বড় অংস বেকার। শিক্ষা সম্পন্ন করে
ডিগ্রী অর্জন করার পরেও চাকরী পাওয়াটা তাঁদের কাছে একটা আরো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারতবর্ষে বেকারত্বের সংখ্যা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে দু’বছর ধরে কোনোও সরকারী তথ প্রকাশ
করা হয়নি, তবে সম্প্রতি ফাঁস হয়ে যাওয়া একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিগত ৪৫ বছরে ভারতের বেকারত্বের হার সর্বাধিক। অর্থাৎ ৬.১ শতাংশ। বেকারত্বের এত বড় একটি
সংখ্যা সত্যি উদ্বেগের বিষয়। বেকারত্বের হারকে কমাতে হলে আমাদের নিজেদের পলিসি
বা নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। এবং শিক্ষিত ও দক্ষ যুবকদের চাকরী
দেওয়ার জন্য দেশজুড়ে একটি শিল্প নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে। যখন চাকরী হবে তখন পকেটে
টাকাও আসবে, আর যখন পকেটে টাকা থাকবে তখন যুবক সমাজ বাজার অভিমুখী হয়ে জিনিসপত্র কিনবে। যখন চাহিদার বৃদ্ধি
হবে তখন শিল্প স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে।
বেকারত্বকে দূরীকরণের আর একটি উপায় হল তরুণদের দেশের
মধ্যেই রেখে কাজ দেওয়া ও বাইরের দেশে না যেতে দেওয়া। আমাদের চেষ্টা হবে তাঁদের
দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দেশের উপকার করা।।
প্রবন্ধটি আপানার কেমন লেগেছে? কমেন্ট বক্সে কমেন্ট
করে জানান। ধন্যবাদ!
মতামত দিন