
পুনরাগমনায় চ
কলমেঃ কথাকলি
পুনরাগমনায় চ
---------------------------------------------------------
দুর্দিনের পৃথিবী আজ নিরানন্দে সিক্ত।
বিভাজনে অসমাপ্ত। কিছুটা অসঙ্গতও হয়তো!
এরইমাঝে শরতের নির্মলাকাশে,
শিউলির আঘ্রাণে দূর্গা এলো ঘরে।
অসুস্থ পৃথিবী অনেকটা পথ পেরিয়ে...
আজ বুঝি কিছুটা সুস্থির।
কিন্তু তার থেকে অনেকবেশি অস্থির মানুষের মন।
কুমোরটুলি থেকে নানা ভূষণে ভূষিতা হয়ে,
পার্বতী নন্দন এলো বাপের ঘরে।
আগমনের আনন্দে ঢাক বাজলো কি বাজলো না
শুরু হয়ে গেলো ষষ্ঠীর আরাধনা।
অসুখের মোকাবিলায় সকলের মুখ আজ
মুখোশের অন্তরালে। মনে আশঙ্কা, দ্বিধা, জড়তা।
সব কাটিয়ে অভয় দায়িনী মা,
জাগ্রতচিত্তে নির্মলেন্দু আলোয় সম্পৃক্ততা।
দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষারত আয়োজনে মা বিভূষিতা।
সপ্তম-অষ্টম-নবম পেরিয়ে দশমের ঘরে পা দিতেই,
ছলকে উঠলো চোখের কোনে জল।
প্রতিমা নিরঞ্জনের ডালা উঠলো সেজে হাতে হাতে।
মঙ্গলঘট মাথায় নিয়ে সাঙ্গ হলো গঙ্গাপূজা।
এবার যে মায়ের ঘরে ফেরার পালা।
বিসর্জনের ঐতিহ্য সম্বলিত স্মৃতি বুকে নিয়ে
অশ্রুসিক্ত নয়নে ফিরিয়ে দিলাম আমরা...
মেয়েকে তার আপন সংসার বৃত্তে।
মা গো যেভাবে এসেছিলে সেভাবেই দশহাতে
রক্ষা করো এ পৃথিবীর পার্থিব-অপার্থিব সাচ্ছন্দ্য।
সম্ভোগের উৎস অনুসন্ধান করতে গিয়ে,
মানুষ যেনো বিপথগামী না হয়।
ঁশুভ বিজয়ার প্রারম্ভে প্রার্থনা থাকে সকলের মনে
যেনো এই বিষন্নতার আলোয় মুখ ঢাকা পৃথিবীর
আচ্ছাদনের আড়ালে যাকিছু অশুভ,অনাকাঙ্ক্ষিত
নতুন ভোরের আলোয় যেনো সে পরিশেষে এক
সুনিশ্চিত,সুনির্মল,সুপ্রভাত হয়ে ফিরে আসে।
আবাহনের পরেই বিসর্জনের বিদায়ের সুরে
কেঁদে ওঠে দিক দিগন্তের আকাশ বাতাস।
দূর থেকে দূরে মিলায় ঢাকের বাদ্যি।
ধ্বনির প্রতিধ্বনিতে মেঘ মন্দ্রিত কন্ঠে
কানে বেজে ওঠে সেই মন্ত্রের সুর...
ওঁ গচ্ছ গচ্ছ পরং স্থানাং স্বস্থানং পরমেশ্বরী।
সম্বৎসর ব্যতীতে তু পুনরাগমনায় চ ।।
ওঁ রাজ্যং শূণ্যং গৃহং শূন্যং সর্ব্বশূণ্যা দরিদ্রতা।
ত্বামৃতে ভগবত্যম্ব কিং করোমি বদস্ব তৎ ।।
...... আবার এসো মাঁ......
মতামত দিন