
অপেক্ষা
নাসরিন সুলতানা
অপেক্ষা
----------------------------------------------------
তখন ছিল প্রখর গ্রীষ্ম।
কাঠ ফাটা রোদ যেন ঠিকরে পড়ছে মাঠে।
মাটি ফেটে হয়েছিল চৌচির।
হয়ে পড়েছিল ক্লান্ত, দুর্বল।
আর সেই ক্লান্ত মাঠে প্রয়োজন ছিল জল।
অবিস্রান্ত বৃষ্টি চায়নি মাঠ,
কারণ সেই পিপাসার্ত মাঠে প্রয়োজন ছিল
শুধু তৃষ্ণা মেটাবার, শুধু মাটি ভেজাবার।
আকাশে মেঘ ছিল অনেক কিন্তু –
কোন বৃষ্টি হয়নি।
তাই মাটি ভেবেছিল, শুধু বৃষ্টি কেন –
প্রয়োজনে পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর জলও তো
পারে তার তৃষ্ণা মেটাতে।
মাঠের করুণ চাহনি নদীকে করেছিল দূর্বল।
নদীর জল দিয়ে তাকে ভেজাতে করেছিল বাধ্য।
শুষ্ক মাটি থেকে বেরিয়ে আসছিল
এক অপূর্ব গন্ধ।
যা ছড়িয়ে গিয়েছিল আকাশে, বাতাসে।
আন্দোলিত মুখরিত তখন দুজনে।
এই ভেজা মাটিতে মাঠ হঠাৎ চাইলো
ফসল ফলাতে।
নদীকে করলো অনুরোধ, আবদারের ঝুড়ি নিয়ে
বসলো নদীর পাড়ে।
আর এসবের মধ্যেই ঘটে গেল সে ঘটনাটা।
আসলে শুষ্ক আর ভেজা মাটির চাহিদার
পার্থক্য তৈরী হতে থাকলো।
অন্য উৎস বেরিয়ে এলো জলের –
উৎস বেরিয়ে এলো চারা রোপণের।
আর গ্রীষ্ম নেই, এসেছে শীত
ক্লান্ত দুপুরের পরীবর্তে এসেছে
শিশির ভেজা শরতের ভোর।
মাটিতে ঝরে পড়ে সেই শিশির।
গজিয়ে উঠেছে কচি কচি ঘাস।
বেড়ে উঠেছে সেই মাটির সন্তানেরা।
নদী এদিকে উত্তাল পাগলের মতো
বয়ে চলেছে তার জলের ধারা।
কিন্তু মাঠ? সে কি চায় নদীর জলকে?
তবে কি মাঠ আজ ভিজে ক্লান্ত –
কিন্তু নদী তাকিয়ে থাকবে – মাঠের দিকে
যদি আবার প্রয়োজন পড়ে নদীকে
যদি মাঠের অতিরিক্ত উপচে পড়া জল
মিশে যায় নদীর সাথে।
তবে আবার একত্রিত হবে তারা
সেই অপেক্ষাতে।।
মতামত দিন