স্বাস্থ্য ও যোগব্যায়াম সংস্কৃতি

হাঁপানিঃ কারণ ও মুক্তির উপায়

27 October 2020
লেখকের নাম: ডাঃ ইয়ার আলী
ধার: মজাহিদুল ইসলাম
দেখেছে: 134

যে কোন ধরণের ইরিটেটিভ কেমিক্যালস যেগুলি আমরা প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকাচ্ছি, সেগুলি ফুসফুস নালিতে জমে যায়। ঐ জায়গাতে মাইক্রোইনজুরি করে। ধুলো, ধোঁয়া, বালি, পরাগরেণু, বাতাসে বিদ্যমান বিভিন্ন সিজনাল ভাইরাস, ফ্লু ভাইরাস, কন্সট্রাকশন ডাষ্ট, গন্ধ প্রভৃতি ফুসফুসের নালীতে জমে গিয়ে মাইক্রোইনজুরি করে ফুসফুস নালীর ভিতরের ওয়ালে, মিউকাস লেয়ারে। এক্ষেত্রে, ব্রঙ্কিয়াল টিউবগুলি হাইপারসেন্সিটিভ হয়ে যায় ইনফ্লামেশনে মিউকাস লেয়ারে ক্ষত থাকার জন্য। এক্ষেত্রে, পরবর্তীতে ঐ জাতীয় বিষগুলি আর সহ্য করা যায়না। এক্সপোজ হলেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। স্টেরয়েড ইনহেলারে সাময়িক স্বস্তি পেলেও পরবর্তীতে কোন কাজই হয়না। কারণ ব্রঙ্কিয়াল ইনার লেয়ার স্টেরয়েড রেজিস্টান্ট হয়ে যায়।

হাঁপানিঃ কারণ ও মুক্তির উপায়

Author's Name: ডাঃ ইয়ার আলী
Credit: 0

হাঁপানিঃ কারণ ও মুক্তির উপায়

লিখেছেনঃ ডাঃ ইয়ার আলী

হাঁপানিঃ কারণ ও মুক্তির উপায়

----------------------------------------------------------

আমদের মধ্যে প্রতি ১০০ জনে ৩-৫ জন বা ততোধিক লোক ফুসফুসের একটি অসুখ শ্বাসকষ্ট বা এজমাতে ভূগেন। তন্মধ্যে ১৫-২০% বাচ্চারাও এতে আক্রান্ত। এই এজমা যখন কোন ব্যক্তিকে পেয়ে বসে তখন তার জীবন দূর্বিষহ হয়ে উঠে। নাকের ছিদ্র দিয়ে ও মুখগহ্বর দিয়ে যে বাতাস প্রবেশ করে সেটা এপিগ্লটিস থেকে ভাগ হয়ে ট্রাকিয়া বা বড় শ্বাসনালীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অসংখ্য শাখা-প্রশাখার মত বড় থেকে ছোট সাইজের পাইপের মধ্য দিয়ে গমন করে। সেই বাতাস ফুসফুসের মধ্যে ঢুকে এলভিওলাই এ বিশেষ প্রক্রিয়াতে রক্তে মিশে। সেই বাতাস বা অক্সিজেন আমাদের দেহের প্রতিটি কোষে সরবরাহ হয়। কোষের শক্তি উৎপাদনের মূল ভূমিকা পালন করে। কোষের বিভিন্ন কার্যাবলীতে উৎপাদিত কার্বনডাই অক্সাইড ফুসফুসের এলভিওলাই এ রক্ত থেকে শ্বাসনালীতে প্রবেশ করে। সেটা আবার ছোট থেকে বড় অসংখ্য পাইপের মত শ্বাসনালীর মাধ্যমে নিঃশ্বাস হিসাবে দেহের বাইরে নির্গত হয়। আমাদের দেহের শক্তি অব্যহত ও কার্যাবলী মজবুত রাখতে অক্সিজেন, পুষ্টি, জল লাগবেই। এই অক্সিজেনকে পরিবেশ থেকে দেহের মধ্যে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়াতে মূল ভূমিকা রাখে—ফুসফুস৷ অতএব, কোন ব্যক্তির এই বাতাস গ্রহণে বা ত্যাগে বাধক তৈরী হলে তার দেহের মধ্যে নানাবিধ মেটাবলিক ও ফিজিওলজিক্যাল সমস্যা অবধারিতভাবে আসবেই। যখন ফুসফুসের এই শ্বাসনালী গুলো কোন না কোন ভাবে Inflammation বা প্রদাহ দ্বারা প্রভাবিত থাকবে, তখন শ্বাসনালীগুলির ব্যাসার্ধ ছোট হয়ে যাবে। শ্বাসনালীর মাংশপেশী কুচকে থাকবে। ভিতরের ওয়ালে প্রচুর মিউকাস তৈরী হবে। ফলে, পর্যাপ্ত অক্সিজেন বা বাতাস পাইপের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে পারবেনা। প্রবল বেগে বাতাস ছোট সাইজের পাইপে প্রবাহিত হলে বাঁশির মত সাঁই সাঁই শব্দ হবে। রক্তে পর্যাপ্ত অক্সিজেন না যাওয়াতে ব্যক্তিটি শারিরীকভাবে দূর্বল হয়ে পড়বে।

ঠিক এই সমস্যাটাই কোন পাইপে, কোন টাইপে, কোন ইনফেকশনে, কোন স্থলে, কোন এজেন্টে, কত সময় ধরে হচ্ছে - তার ভিত্তিতে একই সমস্যার নানাবিধ নামকরণ করা হয়েছে মেডিক্যাল সিস্টেমে।

এজমা বা হাঁপানি তখন বলা হয় যখন শ্বাসনালীতে কোন রকম স্পষ্ট ইনফেকশন ছাড়াই শুধুমাত্র কিছু হাইপারসেন্সিটিভ এজেন্টের জন্য ব্রঙ্কোকন্সট্রিকশন বা শ্বাসনালীর প্রচন্ড সঙ্কোচন হয়। এই রোগীরা সর্বদা তটস্থ থাকে যে, কখন না জানি শ্বাসকষ্ট শুরু হয়!!! তাই, বাড়ির বাইরে রাস্তাঘাটে ট্রেনে বাসে খুবই ভয়ে ভয়ে ও আতঙ্কে চলাফেরা করে। রাস্তার ধুলো, গাড়ির ধোঁয়া, বৃষ্টির জল, অন্যস্থলের জল, শীতের মরসুমের ঠান্ডা, শরতের পরাগরেণু প্রভৃতি থেকে সাবধানে থাকে। একটু ছোঁয়া পেলেই শ্বাসকষ্ট হতে দেরী হয়না। সঙ্গে সঙ্গে স্টেরয়েড ইনহেলার বা ব্রঙ্কোডাইলেটর ইনহেলার টেনে কিছুটা সুস্থ হয়। বিরক্ত হয়ে যায় নিজের উপর! হাঁপানি অসুখটা এমন কেন?? মারছেও না, সুস্থ ভাবে বাঁচতেও দিচ্ছেনা। এই একটা অসুখের জন্য মানুষের বহু স্বপ্ন অপূরণ থেকে যায়। বহু মানুষের অনেক আশা আকাঙ্খা বিসর্জন দিতে হয়। অনেকে বহু ডাক্তার দেখিয়ে দেখিয়ে শুধু মুক্তির আশাতে অনেক টাকা কড়ি ছড়ায়। ডাক্তার বলে দিয়েছেন, “হাঁপানি ভাল হয়না, যতদিন বাঁচবেন টানার ওষুধ নিয়ে থাকতে হবে।”

এই কথা শুনে শুনে রোগীর মনে এই বিশ্বাস জন্মে যায় যে, সত্যিই তো কারোরই ভাল হয়না, আমারও হবেনা। অতএব, সাবধানতা ও ইনহেলার আমার সারাজীবনের সম্বল।

আমি নিজে যখন NRS medical college এ MBBS পাঠরত, তখন 3rd Year এ আমি এই সমস্যাতে আক্রান্ত হই। আমার আব্বা দীর্ঘদিন হাঁপানিতে ভূগতেন – দেখতাম। আমি Chest department এ দেখিয়ে X Ray, Sputum, Blood report করে স্যারদের দেখালাম। বললেন, “বাবু, তোকে এই ইনহেলার টেনে সারাজীবন কাটাতে হবে।” আমি হতাশ হয়েছিলাম। প্রথমতঃ টানতাম। বহুদিন টেনেছি। কিন্তূ, MBBS পাশ করে কলেজে ইন্টার্ন, হাউসস্টাফশিপ কম্প্লিট করে বের হয়ে যখন দেখলাম শুধু হাঁপানিই নয়, আরও অসংখ্য রোগ আছে যার চিকিৎসা থাকলেও মুক্তি নাই। সারাজীবন ঔষধ খেতে হবে - এই কথাটা আমাকে খুবই পীড়াদায়ক মনে হল। যখন অল্টারনেটিভ মেডিক্যাল ফিল্ডে গভীরভাবে মনোনিবেশ করলাম, গবেষনা করলাম। সহিহ মুসলিমের হাদিশ – “আল্লাহ এমন কোন রোগ পাঠান না, যার চিকিৎসা নাই। যখন রোগ অনুযায়ী সঠিক ঔষধ প্রয়োগ করা হবে তখন আল্লাহর ইচ্ছায় রোগটি সেরে যাবে।”

এই কথাটাই আমার চিকিৎসা জগতের মোড় ঘুরিয়ে দিল। শুরু হল অভিনব তথ্য ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ, জানার অধীর আগ্রহে গভীর অধ্যয়ন। আমি আলহামদুলিল্লাহ গত ৪-৫ বছর থেকে এই ইনহেলার ও স্টেরয়েড থেকে মুক্ত। আজ আমি সেটাই শেয়ার করব যেভাবে আমি মুক্ত হয়েছি।

এবার চলুন দেখি, শ্বাসকষ্ট ঠিক কেন ও কীভাবে হয়?

Conventional medical communities বিশ্বাস করেন যে, হাঁপানি একটি জন্মগত (Genetic) ও Auto immune disease, ট্রাকিয়া, ব্রঙ্কাই, ব্রঙ্কিওল গুলি Auto Immunity এর জন্য আক্রান্ত হয়ে inflammed হচ্ছে। এই inflammation সর্বদাই জারি থাকছে যেহেতু genetic ও auto-immune। কিন্তু এই inflammation কে করছে সেটা বার করতে গিয়ে Immunity পাঁঠার বলি (Scapegoat) হয়ে গেল। Auto immunity নিয়ে research সীমাবদ্ধ হয়ে গেল। আসল কারণগুলি ছুটে গেল। Inflammation নিয়ে গভীর আলোচনা, গবেষণা হল। বহু রকম inflammatory biological mediators কমানোর অনেক রকম ওষুধ আবিস্কার হল। রোগের সিম্পটম্স ও সমস্যা কমানো গেল অবিশ্বাস্যভাবে। কিন্তু, যেহেতু inflammation এর আসল কারণটা অবহেলিত ও উপেক্ষিত থাকল, ফলে আজীবন শ্বাসকষ্টের ঔষধের উপর বহাল থাকতে হল। এবং আসল কারণটি যেহেতু থাকলই, ফলে রোগের প্রকোপ বয়স বাড়ার সাথে সাথে বাড়তেই থাকল। আজকে যে ডোজের ইনহেলার নেয়, আগামীতে আরও বেশী ডোজের ইনহেলার নিতে হয়। আজকে যতগুলি ঔষধ নিতে হয়, আগামিতে আরও বেশী ঔষধ গ্রহণ করতে হয়। এটাই বাস্তবতা ও সত্য ঘটনা।

হাঁপানি সম্পর্কে যে সত্য তথ্যগুলি এখন পরিবেশন করব, সেগুলি শুনে জেনে হতচকিত হবেন!!

প্রথমতঃ Medical Coomunities আজমাকে সাধারনতঃ এক্যুউট ও ক্রনিক হিসাবে জানে। সেটা ঠিক আছে - রোগের আক্রমনের সময়কালের ভিত্তিতে। কিন্তূ, হাঁপানি চার রকম ভাবে ভাগ করা যায় মূল কারণের ভিত্তিতে।

১) নিউরোলজিক্যাল এজমা

২) ভেগাস নার্ভ এজমা

৩) টক্সিক হেভি মেটাল এক্সপোজার এজমা

৪) ভাইরাল কন্ডিসন (EVB) এজমা।

Low grading viral infection of nerves - নার্ভগুলিকে ইনফ্লেইমড করে। নার্ভের ফাংশন কম হয়। শ্বাসনালীতে বাতাস প্রবাহে হাল্কা একটা বাধক তৈরী হয়। যেটা রোগী কম্প্লেইন করে যে, শ্বাস-প্রশ্বাসে একটু কেমন অসুবিধা হচ্ছে, মনে হচ্ছে বুকটা হাল্কা হয়ে যাচ্ছে। বুকের মধ্যে বাতাস ঢুকছেনা - এরকম মনে হচ্ছে। অনেক সময় এই সব রোগীদের সমস্যাকে উপেক্ষিত করা হয়। বলা হয় - এটা এমন কিছু না। কিছু সময় Anxiety বলেও diagnose করা হয়। সেক্ষেত্রে নিউরোট্রান্সমিটার এনহান্সিং (সেরোটনিন) ঔষধ (SRI) দেওয়া হয়। রোগী - এই ঔষধে Symptomatically সুস্থ হ।৷ পরবর্তীতে ঐ রোগীই আরও বড় সমস্যা নিয়ে হাজির হয়। যখন শ্বাসে বাধক তৈরী হয়, বুকের মধ্যে চাপ বা টাইটনেস অনুভূত হয়, তখন প্রচুর এড্রিনালিন সিক্রেশন হয় এই অবস্থাকে সামাল দিতে। তখন সিম্পাথেটিক অভারএক্টিভিটির জন্য বুকে ধড়পড়, হাত পা ঠান্ডা হওয়া, হাত পা টেনে নেওয়া প্রভৃতি নিয়ে রোগী এমার্জেন্সিতে আনয়ন করে। অধিকাংশ রোগীদের কোন সর্দি কাশি জ্বর কিছুই থাকেনা। চিকিৎসকেরা Panic Attack or anxiety ডায়াগনোস করে চিকিৎসা করেন।

যে রোগীর এই রকম স্বাস্থ্য সমস্যা হয় তার Chronic Low Grade EVB infection লিভারেও থাকবেই। এই রোগীর লিভারে পুঞ্জিভূত বিষের পাহাড় যেগুলি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে জন্ম থেকে এমনকি মাতৃগর্ভ থেকেই জমছে। আমাদের পাণীয়, আমাদের খাদ্য, আমাদের আসবাব পত্র, বিভিন্ন ঔষধিতে নানাবিধ বিষ, কেমিক্যালস, হেভি মেটালস, অক্সিডেটিভ এজেন্ট, প্লাষ্টিকস প্রভৃতি আমরা প্রতিনিয়ত খাচ্ছি, এক্সপোজ হচ্ছি, ত্বকের মাধ্যমে শোষণ করছি, শ্বাসের মাধ্যমে ধোঁয়া গ্রহণ করছি। এই বিষাক্ততার ছোবলে আমরা ছারখার হয়ে গেছি৷ বিষের কণার কিছুটা লিভারে জমছে। লিভার তার সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় বিষগুলি বিভিন্ন প্রসেসিং করে দেহ থেকে নির্গমনের চেষ্টা করছে। এই রকম অবস্থায় লিভারে ডর্মান্ট স্টেজে থাকা EBV ঐ সকল হেভি মেটালের উপর ফিডিং করে এক্টিভ ও শক্তিশালী হচ্ছে। লিভারের নিজস্ব ইমিউনিটির বিরুদ্ধে জয়ী হয়ে রক্তে, লসিকাতে চলে আসছে। দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। যখন এই ভাইরাসটি হাল্কাভাবে ফুসফুসে সরবরাহ থাকা বিভিন্ন নার্ভগুলিকে, ভেগাস নার্ভকে অ্যাটাক করে, তখন নার্ভগুলি inflammation হয়ে ফুলে যায়, নার্ভ কন্ডাকশণ কমে যায়। নার্ভের ফাংশন লস হয় কিছুটা। Diaphram বা মধ্যচ্ছদাতে সরবরাহ থাকা ফ্রেনিক নার্ভও ইনফ্লেইমড হয়। ফলে, ফুসফুসে এক কমপ্লেক্স নিট এফেক্ট এসে পড়ে। ভেগাস নার্ভের ইনফ্লামেশনে শ্বাসনালীগুলি পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রসারিত হতে পারেনা। ফ্রেনিক নার্ভের জন্য ডায়াফ্রামের প্রসারন ঠিক থাকেনা। ফলে শ্বাস নিতে বাধক তৈরী হয়। উপরন্তূ, সিম্পাথেটিক অভারএক্টিভিটির জন্য আরও বেশী ব্রঙ্কোকন্সট্রিকশন তৈরী হয়ে এক্যুট এজমা লাইক সমস্যা তৈরী হয়। যেহেতু, এই রকম স্বাস্থ্য সমস্যা হওয়ার আগে লিভারকে দূর্বল অবস্থাতে পাওয়া যাচ্ছে, তাই এই রোগীদের গ্যাসের সমস্যা, ক্ষিদের সমস্যা, হজমের সমস্যা, পায়খানার সমস্যা প্রভৃতি থাকবেই। স্কুল কলেজের পড়ুয়ারা বা বাড়ির কেউ কোন স্ট্রেস বা মানসিক চাপ পেলেই স্ট্রেস হরমোন এড্রিনালিন বেশী সিক্রেশন হয়। সিম্প্যাথেটিক এক্টিভিটি বাড়ে। ওদিকে পূর্ব থেকেই ভেগাস বা ফ্রেনিক নার্ভ দূর্বল অবস্থাতে আছে। ফলে, এই মহুর্তে, ঐ স্ট্রেস একটি ট্রিগার ফ্যাক্টর হিসাবে রোগীর শ্বাস নিতে কষ্ট, বুকে চাপ ধরা, বুক ধড়পড় করা, হাত পা অবশ, ঠান্ডাভাব, মাংশপেশী টেনে নেওয়া প্রভৃতি হবে। এটাকে বলা হয় Neuro-asthma।

হেভি মেটাল এক্সপোজ এজমা - যখন ক্রনিক ভাইরাল ইনফেকশনে ভেগাস ও ফ্রেনিক নার্ভ ইনফ্লেমড থাকবে, তখন যে কোন ভাবে হেভি মেটালের এক্সপোজ হলেই এজমা বাড়বে। কারণ, ভাইরাসের জন্য হেভি মেটালস খুব ভাল খাবার। এক্ষেত্রে, স্টেরয়েড যেহেতু নার্ভকে শান্ত করে ফলে স্টেরয়েড ইনহেলার স্বস্তিদানে সহায়তা করে। কিন্তু, যেহেতু ভাইরাস ঐ স্টেরয়েডে শক্তিশালী হবে ফলে অদূর ভবিষ্যতে শ্বাসকষ্ট আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। আজকে ২০০ পাওয়ারের স্টেরয়েড নিলে আগামিতে ৪০০ পাওয়ার নিতেই হবে।

Inflammed bronchial asthma -

ঐ জাতীয় ইরিটেটিভ এজেন্টগুলি ফুসফুসে দিনের পর দিন ঢুকছেই। ফুসফুস বের করে দিচ্ছে অনেকটাই। কিন্তূ কিছুটা হলেও মিউকাস লেয়ারে স্টাক হয়ে যাচ্ছে। যতই প্রশ্বাস নিচ্ছি, ঐ ইরিটেন্টটা ততই ফুসফুসের ভিতরে প্রবেশ করছে। যতই প্রশ্বাস নিচ্ছি, ততই বেশী বেশী পরিমাণে জমছে। একটা সময় এত পরিমাণে হয়ে যায় যে, মিউকাস আর ঐ ইরিনেন্টকে বের করতে পারেনা। এই মিউকাস কিন্তু ফুসফুস নালীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ডিফেন্সিভ মেকানিজম ও হাতিয়ার। গলাতে, ফুসফুসের নালীতে মিউকাস (জলের মত তরল পদার্থ) থাকতেই হবে। যাতে ইনফেকশন, ইরিটেটিভ এজেন্ট ক্ষতি না করতে পারে। এই হেল্দি মিউকাস ঐ ক্ষতিকর জিনিসগুলি কফ ও থুতুর মাধ্যমে দেহ থেকে বের করে দেয়। আবার, এই মিউকাস লিভারে, ব্লাডে, লসিকাতে, অন্যান্য অর্গানে থাকলে খুবই ক্ষতিকর।

ফুসফুস নালীতে ফ্লু ভাইরাস, ইনফ্লুয়েন্জা ভাইরাস, ক্লামাইডিয়া, মাইকোব্যাকটেরিয়াম, ফাঙ্গাস,স্ট্রেপটোকক্বাই, স্ট্যাফাইলোকক্বাই প্রভৃতি মাইক্রোঅর্গানিজম প্রবেশ করলে ঐ ইরিটেটিভ এজেন্টের মতই ফুসফুসের নালীতে জীবাণুগুলি জমতে থাকে। আস্তে আস্তে গভীরে প্রবেশ করে। লাঙ প্যারেনকাইমাতে অনুপ্রবেশ করে।

এই ভাবে মিউকাস লেয়ারে ক্রনিকভাবে বেশী বেশী পরিমাণে মিউকাস পূঞ্জিভূত হলে ও বিভিন্ন জীবানুর ইনফেকশনে মিউকাস থকথকে ও শক্ত হয়ে যায় পুঁজের মত। তখন পুরো শ্বাসনালীটাই মিউকাস দ্বারা ব্লক হয়ে যায়। শুরু হয় প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট। উঠে আসে পাকা পাকা কফ। এক্ষেত্রে, ব্রঙ্কাইটিস বা ব্রঙ্কিওলাইটিস তৈরী হয়। ক্ষত-বিক্ষত শ্বাসনালীর মিউকাস লেয়ার বিভিন্ন ইরিটেটিভ এজেন্ট, সিজনাল ফ্লু ভাইরাসে ঘন ঘন আক্রান্ত হয়। বিভিন্ন জীবাণুর ভিন্নতায় তৈরী হয় বিভিন্ন রকম লেশন ও কনসলিডেশন। এক্ষেত্রে, প্রপার এন্টিবায়টিক, এন্টি সিক্রেটরি, মিউকোলাইটিক, এক্সপেক্টরেন্ট দিয়ে রোগীর চিকিৎসা করা হয়। রোগী সুস্থ হয়। কিন্তূ, ক্ষত-বিক্ষত, হাইপারসেন্সিটিভ, ক্রনিক ভাইরাল ইস্যু অবহেলিত থাকে বলে রোগীটি সারাজীবনই এই সমস্যায় ভূগতেই থাকে। এটিকে অনেক ক্ষেত্রে Chronic Bronchitis বলে অবহিত করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রেও, ব্রঙ্কোডাইলেটর ও স্টেরয়েড ইনহেলার দিয়ে রোগীকে সাময়িক স্বস্তি দেওয়া সম্ভব হলেও সম্পূর্ণ নিরাময় অধরাই থেকে যায়।

মুক্তি কীভাবে???

১) নিজের দেহের, লিভারের, ফুসফুসের ইমিউনিটি বৃদ্ধি করা। যাতে ক্রনিক লো গ্রেড ভাইরাল ইনফেকশনকে প্রতিহত করা যায়। এরজন্য Thymoquinone rich BSO, Phytonutrients rich Honey, Vitamin-C, Zinc প্রভৃতি নিয়মিত বেশ কিছু সময় খেতে হবে।

২) Antiviral, Antibacterial food - supplemets যেমন- Licorice, Cat's claw, Zaitus, Lemon Balm বেশ কয়েকমাস খেতে হবে।

৩) Mucus layer and damaged nerves repairing Foods খেতে হবে।

৪) Heavy Metals detoxification ফুডস খেতে হবে। এক্ষেত্রে, Spirulina, Blue berry দারুন কাজ করে।

৫) মনের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও মানসিকভাবে মজবুত হওয়া - যাতে স্ট্রেস হরমোন এড্রিনালিন রাস না তৈরী হয়।

৬) স্টেরয়েড ওষুধ বন্ধ করা। ইরিটেটিভ এজেন্ট পারতঃপক্ষে এড়িয়ে চলা। অন্ততঃ নার্ভ ও ব্রঙ্কিয়াল ওয়াল মেরামত ও মজবুত না হওয়া পর্যন্ত।

৭) যে সমস্ত খাদ্য প্রচন্ড মিউকাস প্রডিউসিং করে যেমন ডিম, দুধের দ্রব্য বন্ধ রাখা।

৮) যে সমস্ত খাবার ও তার উপাদান বিভিন্ন প্যাথোজেনকে ফিডিং ও শক্তিশালী করে যেমন - মাংস, সয়াবিন, সাদাতেল, ভূট্টা, চিনি, মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট, এসপার্টেম, আর্টিফিসিয়াল কালার ও ফ্লেভার এভোয়েড করা।

চেষ্টা করুন, আপনিও সুস্থ থাকবেন ইনশাল্লাহ। সম্পূর্ণ সুস্থতা আপনার কাম্য।।

ধন্যবাদ!!!