
কবিতাঃ একটা দিনের শেষ
কলমেঃ কথাকলি
একটা দিনের শেষ
--------------------------------------------------------------
পশ্চিমের রোদ এখন অনেক তাড়াতাড়ি,
জানালার গরাদ ছুঁয়ে যায়।
রোদের হাল্কা আদরমাখা আভায়,
ছেয়ে থাকে গাছের পাতাগুলো।
শুকনো ডালে কোথাও দু এক কুচি ফুলের উঁকি
কার্ণিশে ঘুমিয়ে থাকা পোষ্য,
রাস্তার ধারে বালির গাদায় কুন্ডলী পাকিয়ে শুয়ে
কুকুর দু একটা এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে।
সাইকেলের ঘন্টি বাজিয়ে,
চোখের পলকে মিলিয়ে যাওয়া সাওয়ারি।
ভাত ঘুম দিয়ে ওঠা দুটি অবসন্ন চোখ তাকিয়ে...
রের ধূসর নীলাভ আকাশের গায়।
হাতে লাল চায়ের পিরিচ-পেয়ালা
জিড়িয়ে নেওয়ার অলসতায় ডুবে যেতে যেতে,
একসময় হারিয়ে যায় লাল টকটকে সূর্যটা
তারপর রুটিনমাফিক অভ্যাসে ঢিমেতালে।
শেষ হতে থাকে জীবনের বাকি অংশটুকু
বেহিসেবী স্বপ্ন দেখার ভীড়ে জোড়াতালির অবসরে,
মন এক আনা দু আনার হদিস খুঁজে পেতে চায়
অস্তমিত সূর্যটা ধীর পায়ে এগিয়ে চলে...
পৃথিবীর ওপারে নতুন এক ভোরের সন্ধানে
চোখ ধাঁধানো নিয়নের আলোয়,
আঁধার ঘনায় মাঠের একপাশে ঘাসের বুকে
সান্ধ্য আড্ডার মজলিসে মগ্ন কিছু পৌঢ়, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা।
ঘনিষ্ঠ অন্তরঙ্গতা নেমে আসে প্রেমের চিবুকে,
অন্তরঙ্গতা প্রেমের উষ্ণ আলিঙ্গনে।
অশান্ত পাখির কলরবে মুখরিত তখন শহর
পাখির সেই ডাক যেনো, সবাইকে ঘরে ফেরার জন্য উন্মুখ করে।
তীব্র গতিতে ছুটে যাওয়া যানের দমকা হাওয়া,
পিচ রাস্তার কালচে বুকে ভীড় বাসে অফিস ফেরত যাত্রী।
ঘামের গন্ধের ক্লান্তিতে কর্তব্যরত পরিষেবার ছাপ,
ঘুমন্ত শিশু মায়ের কোলে আলগোছে।
যে যার কর্মকাণ্ডের স্বাক্ষর মুদ্রিত করে যায়,
সুদক্ষ ভঙ্গিতে এই অল্পায়ু জীবনের পরিসরে।
ঘড়ির কাঁটায় দিনযাপন,
সেদিনের মতো সমাপ্ত হতে হতে ঝিমিয়ে আসে।
নবজাগরণের প্রস্তুতিতে ঘুমিয়ে পড়ে শহর...
বুকে নিয়ে এক আকাশ অভিমান!
ঘুমায় না শুধু রাতের একাকী চাঁদ, টিমটিমে তারা, ওই দূরের সূর্য
আর শেষ না হওয়া, শহুরে কালো পিচের সড়কপথটা।।
মতামত দিন